আজিজুর রহমান রাজু:
প্রায় সব নির্বাচনেই প্রার্থীরা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সাধারণত একে অন্যের সমালোচনা,
কটূক্তি ও বিষোদ্গার করে ভোট চান।
কিন্তু কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার প্রার্থীরা কেউ কারও সমালোচনা বা বিষোদ্গার না করে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন তারা।নির্বাচনকে ঘিরে সেখানে নেই টাকার ছড়াছড়িও। ২৮ এপ্রিল ওই ওয়ার্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ওই ওয়ার্ডে মেম্বার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ জন। তাঁরা হলেন জুবায়ের উল্লাহ জুয়েল,মোঃ বাবুল,সাইফুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম,জসিম উদ্দিন
সিরাজুল ইসলাম ও জসিম উদ্দিন এর আগে ইউপি সদস্য ছিলেন মোঃ বাবুল,সাইফুল ইসলাম,জুয়েল এবারই প্রথম ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,ইসলামাবাদ ইউনিয়নের গজালিয়া ০৯ নং ওয়ার্ডের মোট ভোটার সংখ্যা ২২৬০,পুরুষ ভোটার ১২৩১,মহিলা ভোটারদের সংখ্যা ১০২৯ জন।
গজালিয়া গ্রামের শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন,ওই তিন প্রার্থীর মধ্যে ভোট চাওয়ার প্রতিযোগিতা আছে।কিন্তু তাঁরা একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।ভোটারদের কাছে কিংবা নির্বাচনী কোনো পথসভায় কেউ কারও সমালোচনা করছেন না।
টাকার ছড়াছড়িও নেই। নিজের যোগ্যতা ও ভোটে নির্বাচিত হলে কে কী করবেন,তা-ই ভোটারদের কাছে তুলে ধরে তাঁরা ভোট চাচ্ছেন। ইউপি নির্বাচনে এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত।
গজালিয়া ০৯ নং ওয়ার্ডের ভোটার শওকত,কাসেম,মুর্শেদ আলম,আরিফুল ইসলাম,নেজাম উদ্দিন,শাহিন আজমসহ অনেকে বলেন,ভোটের প্রচারণা চালানোর সময় বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় মধ্যম গজালিয়া মিয়াজি বাজার এলাকায়
তিন প্রার্থী মুখোমুখি হন।এ সময় তাঁরা একে অন্যকে বুকে জড়িয়ে হাসিমুখে কোলাকুলি করেন।
উপস্থিত ভোটাররা করতালি দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানিয়েছেন।
মেম্বার পদপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ভোটাররা ভোট দেন প্রার্থীর যোগ্যতা বুঝে। তাই ভোটারদের কাছে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমালোচনা ও বিষোদ্গার করাটা নোংরামি ছাড়া কিছু না। প্রচারণা চালানোর সময় কখনো কখনো আমরা তিন প্রার্থী একসঙ্গে হয়েও ভোট চাচ্ছি। ভোটাররা এটাকে ভালো দৃষ্টিতে নিচ্ছেন।
মেম্বার পদপ্রার্থী জুবায়েদ উল্লাহ্ জুয়েল বলেন,
ওই দুই প্রার্থীর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে।
ভোটে প্রার্থী হয়েছি বলে আমরা আজ একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বাবুল আমার ছোট কালের বন্ধু দীর্ঘদিনের আমাদের সম্পর্ক আমরা মিলেমিশে কাজ করছি আল্লাহ যাকে কবুল করে সে হবে জনপ্রতিনিধি।কিন্তু কেউ কারও বিরুদ্ধে নই। ভোট চাচ্ছি নিজের যোগ্যতা তুলে ধরে।
আরেক প্রার্থী মোঃ বাবুল বলেন, ভোটাররা কারও সমালোচনা পছন্দ করেন না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা অনেকে না বুঝে এটা করেন। আমরা তিন প্রার্থী ভোটের ময়দানে কেউ কারও সমালোচনা করছি না। এতে প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের কাছে আমাদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রয়েছে।
গজালিয়া ইসলামী ইয়াং সোসাইটির সভাপতি ও গজালিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসার সুপার মওলানা আমির হোসাইন বলেন,বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটের প্রচারণা চালাতে গিয়ে অনেকে একে অন্যের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে দেখি । কিন্তু ইসলামাবাদ ইউনিয়নের গজালিয়া ৯নং ওয়ার্ডের প্রার্থীরা তা করেননি। শুনেছি তাঁরা ভোটারদের কাছে কেউ কারও সমালোচনা না করে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরে ভোট চাচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত।
গজালিয়া সোশ্যাল বিজনেস সংগঠন (জিএসবি গ্রুপ)-এর সভাপতি সাহাব উদ্দিন সিহাব বলেন,
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ সাধারণত আমরা দেখি না। কিন্তু ইসলামাবাদ ইউনিয়নের গজালিয়া ০৯নং ওয়ার্ডের প্রার্থীরা মিলেমিশে ভোটের প্রচারণা যেভাবে চালাচ্ছেন,নির্বাচনে এটি একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।
Leave a Reply